বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ ‘বিউটিফুল বোয়ালমারীর’ নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কার্যক্রম ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌরসদরে প্রশংসনীয় হয়ে উঠেছে। সংগঠনটি ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মানুষের জন্য কিছু করার ভাবনা থেকে একদল নবীন শিক্ষার্থীর উদ্যোগে ‘বিউটিফুল বোয়ালমারীর’ যাত্রা শুরু। এরই মধ্যে সংগঠনের পক্ষ থেকে ৪৪টি ফ্রি স্বাস্থ্য মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে। প্রতি শুক্রবার ভোর থেকে ৮ট পর্যন্তু এ ক্যাম্পেইনে চলে বিনামূল্যে প্রেসার, ব্লাড সুগার, অক্সিজেন, পাল্স ও ওজন মাপার কার্যক্রম। এর বাইরে বিউটিফুল বোয়ালমারীর অন্যান্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে পৌর শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ময়লা ফেলার ঝুঁড়ি বিতরণ, বৃক্ষরোপন, সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য বিউটিফুল স্কুল পরিচালনা প্রভৃতি কার্যক্রম। সংগঠনের উদ্যোক্তা মুখলিসুর রহমান মাহিন ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌরসদরের গুনবহা এলাকার বাসিন্দা। তিনি গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামী শিক্ষায় মাস্টার্স শেষ করেছেন। এছাড়া সংগঠনের ১৭জন ভলান্টিয়ার সবাই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উচ্চ শিক্ষায় অধ্যয়নরত রয়েছেন।  শুক্রবার (২২ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে বোয়ালমারী চৌরাস্তা সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভের খোলা চত্বরে চলছে ‘সুস্থ্য বোয়ালমারী-সুখী বোয়ালমারী’ ব্যানারে ওই স্বাস্থ্য ক্যাম্পেইনের কার্যক্রম। ৪৪জন নারী-পুরুষকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হয় ওই দিনের ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে। বিউটিফুল বোয়ালমারীর সমন্বয়কারী, বোয়ালমারী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কামারগ্রামের বাসিন্দা শামীমা আলম রথি জানান, শুধু এই স্বাস্থ্য ক্যাম্পেইন নিয়মিত পরিচালনার জন্য আমি কলেজ খোলার পর থেকে প্রতি বৃহস্পতিবার বাড়ি চলে আসি। এ পর্যন্তু আমাদের মোট ৪৪টি স্বাস্থ্য ক্যাম্পেইনের প্রতিটিতে গড়ে ৫০-৬০ জন ব্যক্তিকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, বর্তমান প্রজম্মকে স্বাস্থ্য সচেতন করতে ভোরে ঘুম থেকে ওঠা, দলবেঁধে হাঁটাহাটিঁ ও নিয়মিত শরীর চর্চা করা আমাদের সংগঠনের একটি অন্যতম কাজ। শামীমা ফরিদপুর সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের
  শিক্ষার্থী। শুক্রবার সকালে ওই ক্যাম্পে সেবা নিতে আসা পৌরসদরের গুনবহা গ্রামের গৃহিনী হোসনেয়ারা বেগম (৫৫) ও পূর্ব কামারগ্রামের রবিউল ইসলাম (৬০) বলেন, শহরের মাঝখানে হাঁটার পথে এমন স্বাস্থ্য সেবার আয়োজনে আমরা মুগ্ধ। এখান থেকে আমিসহ অনেকেই উপকৃত হচ্ছে। শুক্রবার এবং ভোরবেলা আয়োজকদের এমন দুটো ভাবনাই প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় রাস্তায় হাঁটাহাঁটির সময় সকলের জন্য সহায়ক হয়েছে। সংগঠনের উদ্যোক্তা মুখলিসুর রহমান মাহিন জানান, পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর শিবপুরের হেলিপোর্ট এলাকায় বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে আমরা একটি স্কুল পরিচালনা করি। সেখানে শুরুতে প্রায় ৫০জন শিশুকে পাঠদান করা হতো। বর্তমানে শিক্ষার্থী একটু কমেছে। এক বছরে ছয় শতাধিক বিভিন্ন জাতের বৃক্ষরোপন ও পৌর শহরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পৌরবাসীকে উদ্বুদ্ধ করতে পনেরটি ঝুড়ি বিতরণ করা হয়েছে। বোয়ালমারী পৌরসভার মেয়র মো. সেলিম রেজা লিপন জানান, বিউটিফুল বোয়ালমারীর নানাবিধ সামাজিক কার্যক্রম প্রশংসনীয়। আমি নিজেও তাঁদের কয়েকটি সামাজিক অনুষ্ঠানে গিয়েছি ও তাঁদের সহযোগিতা দিয়ে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।